হাফেজ মোঃ গোলাম মোস্তফা – পরিবর্তনে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ একজন উদ্যোক্তা
সদস্যের নামঃ হাফেজ মোঃ গোলাম মোস্তফা (০১৮৩২১২৯৭৩৯)
পিতার নামঃ মৃত আলহাজ হাফেজ আব্দুস সাত্তার
আইডি নংঃ ০৬
সমিতি কোড নংঃ ৫০৫
শাখাঃ সয়দাবাদ
সংস্থাঃ ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এনডিপি)

ভুমিকাঃ

সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর গ্রামের কঠোর পরিশ্রমি একজন মানুষ হাফেজ মোঃ গোলাম মোস্তফা।তার স্বপ্ন একটাই কিভাবে তার তাঁত কারখানাকে আরো ভাল করা যায়।একদিন তার সাথে পরিচয় হয় এনডিপি এসইপি প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ আশরাফুজ্জামানের সাথে। তিনি তাকে ব্যবসায়ের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি তাঁত কারখানার পরিবেশ নিয়েও আলোচনা করেন।তার কথায় তিনি মুগ্ধ হন এবং এসইপি তাঁত প্রকল্পের সাথে যুক্ত হন।

 পূর্বে কারখানর স্বাস্থ্য সুরক্ষা অবস্থা

বর্তমানে কারখানর স্বাস্থ্য সুরক্ষা অবস্থা

পটভুমিঃ
সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলাস্থ রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা হাফেজ মোঃ গোলাম মোস্তফা (৪৩)পিতা মৃত আলহাজ হাফেজ আব্দুস সাত্তার । আমাদের বাব দাদার আদি ব্যবসা এই তাঁত ব্যবসা। আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে বংশানুক্রমিক সিরাজগঞ্জের ঐতিবাহী তাঁত ব্যবসা শুরু করেন গোলাম মোস্তফা। শুরুতে তিনি পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৪ টি পিক লুম দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে তার ১২ টি পাওয়ার লুম ।ব্যবসাকে বড় করতে গিয়ে তার মূলধন ঘাটতি দেখা দেয়। গত ২০২০ সালের ১০ মার্চ ব্যবসায়িক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এসইপি প্রোগামের আওতায় ১৫০০০০ (এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা) এনডিপি হতে ঋণ গ্রহণ করে তার ব্যবসা সম্প্রসারণ করেন।
এসইপি প্রকল্পে সংশ্লিষ্টতাঃ
হাফেজ মোঃ গোলাম মোস্তফা গতানুগতিক ধারায় তাদের ব্যাবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল। তিনি কখনো তাদের কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনায় নিজেদের ও শ্রমিকের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও কর্ম পরিবেশের উন্নয়ন তথা টেকসই ব্যাবসায়িক ধারণা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেননি। ফলশ্রুতিতে তাদের অজান্তেই তারা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন: কানে কম শোনা, শ^াসকষ্ট, চোখেরর নানা সমস্যা, বিভিন্ন চর্ম রোগ সহ আরও নানান জটিলতায় ভুগতে থাকে। এ সমস্ত স্বাস্থ্য সমস্যার পাশাপাশি তারা কখনো তাদের কারখানায় বিদ্যমান বিভিন্ন ঝুঁকি যেমন: অগ্নি দূর্ঘটনা, জেনারেটর হতে নির্গত কালো ধোয়া ও শব্দে সৃষ্ট বায়ু দূষণ ও শব্দ দূষণ, চলমান মেশিনে সংঘটিত কোন দূর্ঘটনার ক্ষতি প্রশমনে কোন প্রকার প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে ভাবেননি এমনকি কখনোই তাদের মনে হয়নি তাদের ব্যবসা ক্ষেত্রে এই বিষয় গুলোর কোন দরকার আছে।

কিন্তু ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও পিকেএসএফের অর্থায়ন ও এনডিপি কর্তৃক বাস্তবায়িত সাসটেইনেবলএন্টারপ্রাইজ প্রজেক্টের(এসইপি) ঋণ দানকার্যক্রম শুরু হওয়ার পর হাফেজ মোঃ গোলাম মোস্তফা উল্লিখিত বিষয় সমূহের গুরুত্ব সম্পর্কে এনডিপির কর্মীদের মাধ্যমে পরিচালিত বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে জানতে পারেন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন চলমান প্রকল্পের আওতায় ঋণ গ্রহণ করে তার কারখানায় পরিবেশবান্ধব অনুশীলনের চর্চা শুরু করবেন। হাফেজ মোঃ গোলাম মোস্তফা গত গত ২০২০ সালের ১০ মার্চ তারিখে চলমান প্রকল্পের অগ্রসর-এসইপি ঋণ খাত হতে ১৫০,০০০/= (এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা) ঋণ গ্রহণ করে তাঁর ব্যবসার পরিধি বাড়াতে ও কারখানায় পরিবেশবান্ধব অনুশীলন নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হন।

তিনি একজন আধুনিক তাঁত উদ্যোক্তা। এই অঞ্চলের মানুয়ের মাঝে তিনি পরিবেশ সচেতন একজন তাঁত উদ্যোক্তা হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে।তিনি তার আধুনিক লুমে লুঙ্গির পাশা পাশি আরো অন্যান্য জিনিস তৈরী করার কথা ভাবছেন।তার কারখানার দেওয়ালে বিভিন্ন সচেতনাতা মূলক স্টিকার ঝুলানো রয়েছে। যেমনঃ কারখানার অভ্যান্তরে ধুমপান নিষিদ্ধ,মুখে মার্স্ক ব্যবহার করুন,নিরাপদ পানি পান করুন,বর্জ্যদানীতে বর্জ্য ফেলুন ইত্যাদি।

 আগের অবস্থা ফাস্ট এইড বক্স নাই

বর্তমান অবস্থা ফাস্ট এইড বক্স

পরিবেশগত উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিঃ
ব্যবসা সম্প্রসারণ, উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান ও গ্রহণ যোগ্যতা বৃদ্ধিও লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা তাঁর কারখানায় পরিবেশগত উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।

তিনি যে সমস্ত পরিবেশগত উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডসমূহ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছিলেন তা নিম্নরুপঃ
১. স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মাস্ক পরিধানকরা।
২. ফাস্ট এইড বক্স এর ব্যবস্থা করা
৩. অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাপনা।
৪. উদ্যোগে নবায়নযোগ্য জ্বালানী হিসাবে সোলার প্যানেল ব্যবহার করা।

প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়িত পরিবেশগত উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সমূহঃ
উদ্যোক্তা নিম্ন লিখিত পরিবেশগত উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডসমূহ তাঁর কারখানায় বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন-
১. স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মার্স্ক পরিধানকরা।
২. ফাস্ট এইড বক্স এর ব্যবস্থা করা
৩. অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাপনা।
৪. উদ্যোগে নবায়নযোগ্য জ্বালানী হিসাবে সোলার প্যানেল ব্যবহার করা।
পূর্বে কারখানার স্বাস্থ্য সুরক্ষার অবস্থা বর্তমানে কারখানার স্বাস্থ্য সুরক্ষার অবস্থা

 পূর্বে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাপনা ছিল না

বর্তমানে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাপনা আছে

চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাব্য সমাধানঃ
 উন্নত বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকা
 অতিরিক্ত সূদের হার
 কাঁচামালের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি
সমাধান সমুহঃ
 উন্নত বাজার তৈরীর মাধ্যমে উৎপাদিত পর্ণ্য নার্য্য মূল্যে বিক্রয়ের নিশ্চয়তা ।
 সহজ শর্তে স্বল্প সূদে ঋণ প্রাপ্তীর ব্যবস্থা করা।
 কাচামাল বিক্রেতাদের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়ে সহজে কাচামাল প্রাপ্তীর ব্যবস্থা করা।

 পূর্বে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাপনা ছিল না

বর্তমানে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাপনা আছে

ভবিষ্যতপরিকল্পনাঃ
তিনি বলেন, “২০ বছরের ব্যাবসায়িক অভিজ্ঞতায় এ ব্যাবসায় নানা পরিবর্তন আমি দেখেছি তবে কখনোই পরিবেশবান্ধব অনুশীলনের চর্চা নিয়ে এর আগে কেউ কিছু বলেনি। এনডিপির এসইপি প্রজেক্ট এর মাধ্যমে আমি প্রশিক্ষণ পেয়েছি, প্রশিক্ষণে আমাদের কে পরিবেশের উপর হাতে কলমে অনেক কিছু শিখিয়েছেন। স্যারদের উৎসাহে আমি আমার প্রতিশ্রুত অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করছি। আমি এখন বুঝতে পারছি পরিবেশ বান্ধব অনুশীলনের চর্চার গুরুত্ব এবং আশা করছি ভবিষ্যতেও আমি নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে এই অনুশীলন অব্যাৃহত রাখব।”তিনি আরও বলেন যে, তিনি আশে পাশের কারখানার মালিকদের কেউ এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করছেন।