Adopted Environmental Practices

HomeAdopted Environmental Practices

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যে কোন কর্মক্ষেত্রে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের পেশাগত নিরাপত্তা বিধানে উদ্যোক্তার নৈতিক ও আইনী বাধ্যবাধকতা রয়েছে। উত্তম প্রক্রিয়ার প্রচলন ও অনুশীলণ উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের পেশাগত স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমিয়ে কর্মক্ষেত্রকে করে নিরাপদ যা কর্মীদের উৎপাদনশীলতার হার বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি ক্রেতার নিকট পণ্যের গ্রহণযোগ্যতা, বাজারজাতকরণ, ব্র্যান্ডিং, ব্যবসায়িক সুনাম প্রভৃতির সম্প্রসারণ ঘটে। এক্ষেত্রে কারখানার মালিকদের ব্যক্তিগত উদ্যোগের পাশাপাশি কমিউনিটি ভিত্তিক কর্ম-পরিকল্পনারও প্রয়োজন হয়। সাসটেইনেবল এন্টারপ্রাইজ প্রজেক্ট (এসইপি)-এর আওতায় মিনি-গার্মেন্টস (তাঁত) সাব-সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পণ্যের সার্টিফিকেশনের জন্য নিম্মোক্ত  কর্মকান্ডগুলো কারখানা পর্যায়ে বিবেচনা করা প্রয়োজন। এসইপি-তাঁত উদ্যোক্তাগণ বর্তমানে গুড প্র্যাক্টিস ও এনভায়রনমেন্টাল প্র্যাক্টিস মেনে কারখানায় পণ্য উৎপাদন করছে।

গুড প্রাকটিস (অনুসরণীয় বিষয়): সচেতনতামূলক পোস্টার  

  •  সমস্যাভিত্তিক অনুসরনীয় ও শিক্ষণীয় পোস্টার ঝুলানোর ব্যবস্থা করুন। যেমন- উৎপাদন প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত বর্জ্যসমূহ বর্জ্যদানীতে ফেলা।
  • পোস্টারের মাধ্যমে স্থানীয় সমস্যার সমাধান তুলে ধরুন।
  • এমন জায়গায় পোস্টার ঝোলান যেখান থেকে সহজেই সবার দৃষ্টিগোচর হয় এবং সহজেই পড়া যায়। 
  • নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদনের নিকটবর্তী স্থানে উক্ত কাজ সম্পর্কিত পোস্টার লাগাতে হবে।
  • কর্মক্ষেত্রে শিশু শ্রম নিষিদ্ধ বিষয়ক সচেতনতামূলক পোস্টার ঝুলানো উচিৎ।

সম্ভাব্য উপকার/ সুবিধা: 

  • নিরাপদ ও শ্রমিক-সুবিধা কেন্দ্রিক একটি কর্মপরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়ক।
  • এাঁ প্রকাশ পায় যে, মালিক/ ব্যবস্থাপনা কমিটি শ্রমিক, কর্মকর্তা, ও কর্মচারিদেও কল্যাণমুখী সুবিধা বিবেচনা করছে। 
  • কাজ বা কর্মপরিবেশ উন্নতি বিষয়ক বার্তা সহজেই সবার কাছে পৌছানো যায়। 

গুড প্রাকটিস (অনুসরণীয় বিষয়): অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ
  •  কারখানায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক অগ্নিনিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক অগ্নিনির্বাপক এর ব্যবস্থা করা।
  •  কমপক্ষে নিদিষ্ট স্থানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বালতিতে বালি-পানির ব্যবস্থা রাখা।
  • এমন নিকটবর্তী জায়গায় অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র বা বালি ও পানির ব্যবস্থা রাখা যেখানে আগুন লাগার প্রবনতা তুলনামূলকভাবে বেশি। 
  • দেয়ালে বা মেঝেতে তীর চিহ্ন অংকনের মাধ্যমে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রেও অবস্থান চিহ্নিত করতে হবে। 
  •  সম্ভব হলে ফায়ার এলার্ম (আগুন লাগার বিপদ সংকেত) এর ব্যবস্থা রাখা।
  •  দাহ্য বস্তুসমূহকে যথা সম্ভব নিরাপদ স্থানে রাখার ব্যবস্থা করা।  
  • কারখানার বৈদ্যুতিক সংযোগের সংযোগস্থল সহ কারখানার আভ্যন্তরীন বৈদ্যুতিক সংযোগের উন্নয়ন করা।
  • নিরাপদে বহির্গমনের ব্যবস্থা রাখা। 
  • কারখানায় ধূমপান নিষিদ্ধ করা।
  • উায়ার ড্রিলের ব্যবস্থা করা।

সম্ভাব্য উপকার/ সুবিধা:

  •  অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা অর্থ, সম্পদ ও মানব জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
  •  কর্মক্ষেত্রে আগুন লাগার ঝুকি কমিয়ে আর্থিক নিশ্চয়তা প্রদান করে।
  •  নিরাপদ কর্ম-পরিবেশ নিশ্চিত করে।
  •  প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বীমা খরচ ও হ্রাস করে। 
  • শ্রমিক কল্যাণমুখী কারখানা স্থাপনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
গুড প্রাকটিস (অনুসরণীয় বিষয়):

  • নিরাপদ সুপেয় পানির ব্যবস্থা করাকর্মক্ষেত্রে নিয়োজিত কর্মীদের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য কারখানার অভ্যান্তরে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা। 
  • কারখানার অভ্যান্তরে কোন একটি নির্দিষ্ট স্থান যেখান থেকে সহজেই কর্মীরা পানি পান করতে পারবে সেই স্থানে পানির উপযুক্ত ধারক ও গ্লাসের ব্যবস্থা রাখা।
  • শ্রমিকের অনুপাতে গ্লাসের ব্যবস্থা করা।
  • খেয়াল রাখা যাতে কোনভাবেই পানির দূষণ না ঘটে।

সম্ভাব্য উপকার/ সুবিধা:

  •  শ্রমিকের দেহের প্রয়োজনীয় পানির ব্যবস্থার ফলে শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত হয়।
  • পানি জনিত অস্বস্তি দূর হওয়ার ফলে শ্রমিকের কাজে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
  • শ্রমিকের স্বাস্থ্য ভাল থাকায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।
গুড প্রাকটিস (অনুসরণীয় বিষয়):

  • কর্মক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসা বা ফাস্ট এইড বক্সের ব্যবস্থা করা ।
  •  কারখানার উপযুক্ত স্থানে ফাস্ট এইড বক্সের ব্যবস্থা করা।
  • ফাস্ট এইড বক্সের প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন-ডেটল বা স্যাভলন, তুলা, ব্যান্ডেজ, কাঁচি প্রভৃতি রাখা।

সম্ভাব্য উপকার/ সুবিধা:

যে কোন দূর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত চিকিৎসাসেবা প্রদান করা।

  •  আহত ব্যক্তির প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করে উন্নত চিকিৎসার জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা।
  •  ক্ষতির মাত্রাকে প্রশমিত করা।
  • কারখানার মালিকের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হওয়া।
গুড প্রাকটিস (অনুসরণীয় বিষয়):প্রক্ষালন ও শৌচাগার এর ব্যবস্থা

  • পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক প্রক্ষালন ও শৌচাগারের ব্যবস্থা করা।  
  • প্রয়োজনে সাইনবোর্ডের মাধ্যমে পুরুষ ও মহিলাদের টয়লেট পৃথকভাবে চিহ্নিত করার ব্যবস্থা করা। 
  • সাধারণ নিয়মে প্রতি চল্লিশজন পুরুষ ও তিরিশ জন মহিলা কর্মীর জন্য দুইটি করে টয়লেটের ব্যবস্থা রাখা উত্তম।  
  • হাত ধোয়ার জন্য নির্দিষ্ট স্থানে সাবান ও পানির ব্যবস্থা রাখা। নিয়মিতভাবে শৌচাগার পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করা।  
  • সম্ভব হলে প্রতিদিনই ধৌত করার ব্যবস্থা করা। 

সম্ভাব্য উপকার/ সুবিধা:

  • কর্মকর্তা কর্মচারীদের অসুস্থাতাজনিত অনুপস্থিতির মাত্রা হ্রাস পায়।
  • কর্মীদের উৎপাদন মাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়।
  • ক্রেতারা কারখানার কর্মপরিবেশ সম্পর্কে তুলনামূলকভাবে ভালো ধারণা পায় যা ব্র্যান্ডিং এর ক্ষেত্রে নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।
  • হাত ধোয়ার ব্যবস্থা সহ ভালো স্যানিটেশন ব্যবস্থা রোগ সংক্রমণের হার কমিয়ে দেয়।
গুড প্রাকটিস (অনুসরণীয় বিষয়):ব্যাক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার
  • কর্মক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম যেমন:  মাস্ক, গ্লাভস, এপ্রোন  ইত্যাদির ব্যবহার নিশ্চিত করা। শ্রমিক/কর্মকর্তা/কর্মচারীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার বিধি সম্পর্কে সচেতন করা।
  • কর্মক্ষেত্রে রোগ সংক্রমণ সম্ভাবনা ও প্রতিকার সম্পর্কে শ্রমিকদের ধারণা প্রদান।

 সম্ভাব্য উপকার/ সুবিধা: 

  • কর্মীদের নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে।
  •  নিরাপদ কর্ম-পরিবেশ তৈরীতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
  •  কর্মীদের উৎপাদন ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে দেয়। 
গুড প্রাকটিস (অনুসরণীয় বিষয়): বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

  • কারখানায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বর্জ্যদানীর ব্যবস্থা রাখা।
  •  পাওয়ারলুমে উৎপাদিত বর্জ্য সরাসরি বর্জ্যদানিতে ফেলার ব্যবস্থা করা। 
  • বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সচেতনতামূলক পোস্টার ঝুলানো। 
  • জ্বালানি হিসেবে বর্জ্যরে ব্যবহার নিশ্চিত করা। 

সম্ভাব্য উপকার/ সুবিধা: 

  • উৎপাদন হার বৃদ্ধি পায়।
  • কর্মীদের মাঝে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আগ্রহ বাড়ে।  
  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে কর্মীরা আগ্রহী হয়। 
  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কর্ম-পরিবেশ সৃষ্টি হয়। 

গুড প্রাকটিস (অনুসরণীয় বিষয়): কর্মস্থলে আলো-বাতাসের ব্যবস্থা করা

  • কর্মস্থলে যথা সম্ভব প্রাকৃতিক আলোর ব্যবহার নিশ্চিত করা। প্রয়োজনে কারখানার চালে ট্রান্সপারেন্ট শীটের ব্যবস্থা করা যাতে করে  বিদ্যুৎ ব্যবহারের খরচ কমার পাশাপাশি উন্নত কর্ম-পরিবেশ নিশ্চিত হয়।
  • কর্মস্থলে প্রাকৃতিক আলো বাতাসের উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জানালার ব্যবস্থা রাখা।
  •  বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাল্ব এর ব্যবহার বাড়ানো।  
  • সর্বোপরি প্রাকৃতিক আলো-বাতাসের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে কারখানার ভিতরে পুনঃবিন্যাস করতে হবে।

সম্ভাব্য উপকার/ সুবিধা: 

  • কর্মীদের উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদিত পণ্যের গুনগত মান বৃদ্ধি পায়।
  • অবসাদ ও একঘেয়েমি দূর করে।  
  • কর্মজনিত অসুস্থতা যেমন- চোখের ব্যাথা, মাথা ব্যাথা প্রভৃতি দূর করে। 
  • কর্মীদের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক হয় যা অনুপস্থিতির হার তুলনামূলকভাবে কমিয়ে দেয়। 
গুড প্রাকটিস (অনুসরণীয় বিষয়): শিশু শ্রমিক নিয়োগ হ্রাস করা 

  • কারখানায় যথা সম্ভব শিশু শ্রমিক (১৪ বৎসর বয়স পূর্ণ করে নাই এমন) নিয়োগ হ্রাস করতে হবে।
  •  কিশোর শ্রমিক (১৮ বৎসর পূর্ণ করে নাই এমন) নিয়োগ করলেও তাদের কে কোনরূপ ঝুঁকি পূর্ণ কাজে নিয়োগ করা যাবে না। 
  • গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রণীত শ্রম আইন ও বিধিমালা অবশ্যই পরিপালনীয় হবে। 

সম্ভাব্য উপকার / সুবিধা: 

  • ভালো কর্ম-পরিবেশ নিশ্চিত হয়।
  •  ব্যবসায়িক নৈতিকতার বহিঃপ্রকাশ। 
  • ক্রেতার নিকট গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।  
  • ব্যবসায়িক সুনাম বৃদ্ধি পায়। 
এছাড়া আরও যেসব কর্মকান্ড বাস্তবায়ন প্রয়োজন-

  • ন্যাচারাল ডায়িং এর প্রচলন করা।
  •  ডায়িং এর দূষিত পানি নিকটবর্তী ডোবা-নালা বা নদীতে প্রবাহিত না করা। 
  • ট্রেড লাইসেন্স নিশ্চিত করা। 
  •  উৎপাদিত পণ্যের নিরাপদ সংরক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। 
স্থানীয় কমিউনিটির সম্পৃক্ততা স্থানীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত পরিবেশ ক্লাব বা ফোরামে কারখানার মালিকদের সম্পৃক্ত করতে হবে। মাসিক বা সাপ্তাহিক সভায় তাঁদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এসকল মালিকগণ তাদের নিজ নিজ কারখানায় উপরোক্ত প্র্যাকটিস সমূহ বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে। অন্যান্য কারখানায় উল্লিখিত প্র্যাকটিসগুলো বাস্তবায়ন করতে উদ্বুদ্ধ করবে। এছাড়া তারা নিজেরা আলোচনার ভিত্তিতে আরও কি কি প্র্যাকটিস এর প্রচলন করা যায় যা তাদের উৎপাদিত পণ্যের গ্রহণযোগ্যতা দেশীয় ও বিদেশী বাজারে বাড়াবে তা পরিপালনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করবে।