মোঃ হাফিজুর রহমান – এক সময়ের সবজী বিক্রেতা এখন আদর্শ তাঁত উদ্যোক্তা
সদস্যের নামঃ মোঃ হাফিজুর রহমান
আইডি নংঃ ০৮
সমিতি কোড নংঃ ৫০৪
শাখাঃ বাগবাড়ী
সংস্থাঃ ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এনডিপি)

প্রেক্ষাপটঃ
সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার লাহিড়ী বাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মোঃ হাফিজুর রহমান (১৮) পিতা মোঃ শাহ আলম ছোট বেলা থেকেই তাঁতের কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। ব্যবসার পাশাপাশি হাফিজুল ২০২০ সালে এইচ এস সি পাশ করেন। পরিশ্রমী ও আত্ম প্রত্যয়ী কিশোর হাফিজুল।হাফিজুল স্বপ্ন দেখে সিরাজগঞ্জ জেলার ঐতিয্যবাহী তাঁত ব্যবসার সাথে নিজেকে যুক্ত করতে। গত পাঁচ বছর আগে বাবা শাহ আলম মাত্র ৪ টি পাওয়ার লুম দিয়ে তার ব্যবসা শুরু করেন। বাবা শাহ আলম বলতে গেলে এনডিপির শুরু থেকেই সদস্য। ছেলে হাফিজুল মূলধন ঘাটতি মেটাতে তিনি স্থানীয় উন্নয়নসংস্থা ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম-এনডিপির সাথে সম্পৃক্ত হন ২০২০ সালের । তিনি গত ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এসইপি প্রকল্পের আওতায় ৬০০,০০০ (এক লক্ষ টাকা) এনডিপি হতে ঋণ গ্রহণ করেন।

 পূর্বে মাস্ক ব্যবহার করত না

বর্তমানে মাস্ক ব্যবহার করে

এসইপি প্রকল্পে সংশ্লিষ্টতাঃ
ইতিবাচক চিন্তার হাফিজুর রহমান গতানুগতিক ধারাতেই তার ব্যাবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল। তিনি তার কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনায় নিজের ও শ্রমিকের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও কর্ম পরিবেশের উন্নয়ন তথা টেকসই ব্যাবসায়িক ধারণা সম্পর্কে ছিল অজ্ঞ। ফলশ্রুতিতে নানা ধরণের স্বাস্থ্য ও কারখানায় বিদ্যমান বিভিন্ন ঝুঁকি যেমন: অগ্নি দূর্ঘটনা, জেনারেটর হতে নির্গত কালো ধোয়া ও শব্দে সৃষ্ট বায়ু দূষণও শব্দ দূষণ, চলমান মেশিনে সংঘটিত কোন দূর্ঘটনার ক্ষতি প্রশমনে কোন প্রকার প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে ভাবেননি। কিন্তু ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও পিকেএসএফের অর্থায়ন ও এনডিপি কর্তৃক বাস্তবায়িত সাসটেইনেবলএন্টারপ্রাইজ প্রজেক্টের(এসইপি) ঋণ দানকার্যক্রম শুরু হওয়ার পর মোঃ হাফিজুল রহমান উল্লিখিত বিষয় সমূহের গুরুত্ব সম্পর্কে এনডিপির কর্মীদের মাধ্যমে পরিচালিত বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে জানতে পারেন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন চলমান প্রকল্পের আওতায় ঋণ গ্রহণ করে তার কারখানায় পরিবেশবান্ধব অনুশীলনের চর্চা শুরু করবেন। মোঃ হাফিজুল রহমান ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রæয়ারী তারিখে চলমান প্রকল্পের অগ্রসর-এসইপি ঋণ খাত হতে ৬০০,০০০/=( ছয় লক্ষ টাকা) ঋণ গ্রহণ করে তাঁর ব্যবসার পরিধি বাড়াতে ও কারখানায় পরিবেশবান্ধব অনুশীলন নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হন। বর্তমানে আমার আধুনিক ১৮ টি পাওয়ার লুম সুতা বুনানোর জন্য আলাদা মেশিন রয়েছে। ১২ জন শ্রমিক সহ পরিবারের ৪ জন সদস্য কারখানায় কাজ করছি।

পূর্বে কারখানার আভ্যন্তরীন অবস্থা

বর্তমানে কারখানার আভ্যন্তরীন অবস্থা

পরিবেশগত উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিঃ
ব্যবসা সম্প্রসারণ, উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান ও গ্রহণ যোগ্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা তাঁর কারখানায় পরিবেশগত উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি  প্রদান করেন।

তিনি যে সমস্ত পরিবেশগত উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডসমূহ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছিলেন তা নিন্মরূপঃ

১. স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মাস্ক পরিধান করা।
২. বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বর্জ্য দানীর ব্যবস্থা করা।
৩. কারখানার আভ্যন্তরীণ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরা।
৪. সচেতনতা মূলক সাইন বা পোস্টার লাগানো।
৫. ধুলাবালি মুক্ত কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি করা।
৬. আলো বাতাসের ব্যবস্থা করা।
৭. অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা করা

 পূর্বে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাপনা ছিল না

বর্তমানে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাপনা আছে

প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী বাস্তবায়িত পরিবেশগত উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সমূহঃ
উদ্যোক্তা নিন্মলিখিত পরিবেশগত উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডসমূহ তাঁর কারখানায় বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন

১. স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মাস্ক পরিধান করা।
২. কারখানার আভ্যন্তরীণ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরা
৩. সচেতনতা মূলক সাইন বা পোস্টার লাগানো।
৪. অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা করা

 পূর্বে সচেতনতা মূলক পোস্টার ছিল না

বর্তমানে সচেতনতা মূলক পোস্টার আছে

ভবিষ্যতপরিকল্পনাঃ
তিনি বলেন, “ বাবার অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়ে আমি আমার বুদ্ধিদৃপ্ত মেধা এই উদ্যোগে কাজে লাগাতে চাই । তবে কখনোই পরিবেশবান্ধব অনুশীলনের চর্চা নিয়ে এর আগে কেউ কিছুবলেনি। এনডিপির স্যারদের মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর থেকে এবং স্যারদের উৎসাহে আমি আমার প্রতিশ্রুত অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করছি। আমি এখন বুঝতে পারছি পরিবেশ বান্ধব অনুশীলনের চর্চার গুরুত্ব এবং আশা করছি ভবিষ্যতেও আমি নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে এই অনুশীলন অব্যাহত রাখব।”তিনি আরও বলেন যে, তিনি আশে পাশের কারখানার মালিকদেরকেও এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করছেন।